বুধবার, ৮ মার্চ, ২০১৭

মুজিবনগরে সুখ সাগর পেঁয়াজ চাষীদের জীবন ভাসছ দুঃখের সাগরে

Image may contain: one or more people, child, outdoor, nature and food
রেজাউল করিম রেজাঃ সুখ সাগর পেঁয়াজ চাষ করে জীবন মানের উ্ন্নতি হলে গত কয়েকবছর ধরে আর সুখ মিলছে না মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার পেঁয়াজ চাষীদের। চলতি বছরে আবহাওয়া অনুকুল থাকায় পেঁয়াজের ফলন ভাল হলেও হতাশ চাষীকরা। এতে লোকসানের ভয়ে ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ তুলতে সাহস পাচ্ছেন না চাষীরা। ফলে কৃষকদের চোখের সামনেই উৎপাদিত ফসল নষ্ট হবার আশংকা দেখা দিয়েছে ।পেঁয়াজের লোকসান গুনছেন মেহেরপুর জেলার মুজিবনগরের কৃষকরা। গত বছর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া এবং অতি শিলাবৃষ্টির কারণে কৃষকরা পেঁয়াজ চাষে ক্ষতির সম্মূখীন হলেও এবছর তা পুষিয়ে নেয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাজারে পেঁয়াজের দাম কম হওয়ায় উপোজেলার হাজারো কৃষককে লোকসান গুনতে হচ্ছে। মুজিবনগর উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর মুজিবনগর উপজেলায় ১ হাজার হেক্টর জমি পেঁয়াজ চাষের জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল কিন্তু আবাদ হয়েছে ১ হাজার ১ শত ৫ হেক্টর। সবগুলো পেঁয়াজ ওঠানো এখনো শেষ হয়নিতবে এ বছরের প্রাপ্ত গড় ফলন ৩৬ থেকে ৪০ মেট্রিকটন পার হেক্টরে এসে দারিয়েছে। মুজিবনগর উপোজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের পেঁয়াজ চাষি সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ বছর পেঁয়াজের ফলন ভালো হয়েছে। কিন্তু আমাদের উৎপাদিত পেঁয়াজের মান অনেক ভাল হওয়া সত্ত্বেও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইন্ডিয়া থেকে অল্পমূল্যে নিম্মমানের পেঁয়াজ আমদানি করছে। তাই এ বছর বাজারে পেঁয়াজের দাম অনেক কম।
Image may contain: plant, flower, tree, outdoor and natureImage may contain: food
Image may contain: food and indoor
এছাড়াও একই ইউনিয়নের আনন্দবাস গ্রামের পেঁয়াজ চাষি বাবলু বিশ্বাস বলেন, তিনি চার বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করেছেন। উৎপাদিত পেঁয়াজ এখন এত কম দামে
বিক্রি করে তার বিঘাপ্রতি সাড়ে ১০ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হবে। চার বিঘা জমিতে তার লোকসান হবে বলে ভাবছেন ৪২ হাজার টাকা। মোনাখালী ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের চাষি আজিল মোল্লা বলেন, এ বছর আমি নয় একর জমিতে পেঁয়াজের চাষ করেছি। পেঁয়াজের ফলনও ভাল হয়েছে। এখনো বিক্রি করিনি শুনেছি পেঁয়াজের দাম অনেক কম।
দারিয়াপুর ইউনিয়নের একজন চাষি বলেন, আমরা গরিব কৃষক। পেঁয়াজ চাষ করতে আমাদের অনেক খরচ হয়। ব্যাংকে থেকে ও সুদে টাকা এনে পেঁয়াজ চাষ করেছি। যাতে একটু ভালোভাবে থাকতে পারি। কিন্তু এ বছর লোকসান হওয়ায় সুদের ও ব্যাংকের টাকার খুব টেনশনে আছি। কেদারগন্জ বাজারসহ উপোজেলার কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৮ টাকা ১০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। বাজারের পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর পেঁয়াজের দাম কম। কৃষকদের কাছ থেকে
আড়তের মাধ্যমে পাইকাররা পেঁয়াজ কেনেন। আড়তের খাজনা ও যাতায়াতের ভাড়া দিয়ে আমাদের কেজি প্রতি ৫ এর অধিক টাকা দাম পড়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে মুজিবনগর উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাঃ মোফাখারুল ইসলাম এর সঙ্গে আলাপ কালে তিনি বলেন, এ বছর পেঁয়াজের আবাদের লক্ষমাত্রা ও উৎপাদন দুটিই ভাল হয়েছে। কিন্তু বাজারে পেঁয়াজের দাম না থাকায় চাষীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন