বুধবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০১৭

মুজিবনগরের পুরন্দরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ গ্রামবাসীর

বিক্ষিপ্ত জনতার স্কুল ঘিরাও

সোহাগ মন্ডল/ ঃ- মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার পুরন্দরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শিরিনা খাতুনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার পুরন্দরপুর ও খানপুর গ্রামের প্রায় শতাধিক ব্যাক্তি স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ পত্র জেলা  প্রশাসকের কাছে জমা দেয়া হয়েছে।   অভিযোগ পত্র থেকে জানা গেছে, ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের সরকারী বরাদ্দকৃত স্লিপের ৪০হাজার  টাকাসহ বিভিন্ন ৬০ হাজার টাকা ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়েছে। এনিয়ে গত ১১জানুয়ারি বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভায় অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি উঠানো হলে প্রধান শিক্ষিকা শিরিনা খাতুন সন্তোষমুলক জবাব দিতে পারেননি। শিক্ষক ও অভিভাবকেদর সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ তোলা হয়েছে ওই আবেদনে। আবেদনে বলা হয়েছে প্রধান
 শিক্ষিকার এসকল কর্মকান্ডের কারণে অন্যান্য  শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে হতাশা ও উত্তেজনা  বিরাজ করছে।

এদিকে ম্যানেজিং কমিটিতে বিষয়টি নিয়ে হৈচৈ এর খবর   পেয়ে সম্প্রতি ওই স্কুলে সরেজমিনে  পরিদর্শনে গিয়ে ভুয়া বিল ভাউচার করে অর্থ  আত্মসাতের সত্যতা পাওয়া গেছে। ২০১৫-১৬ সালে ডিজটাল ব্যানারের নামে বরাদ্দ দেখা হয়েছে
  সাড়ে ৬ হাজার টাকা। কিন্তু মাত্র ২ফিট বাই ৩ফিটের একটি  ব্যানার করা হয়েছে। যার সর্ব্চ্চো খরচ হতে  পারে ১০৮ টাকা। দেওয়াল চিত্র বাবদ বরাদ্দ খরচ দেখানো হয়েছে ৫হাজার টাকা। কিন্তু বিদ্যালয়ের  শিক্ষকরা জানিয়েছেন দেওয়াল চিত্র তৈরি করতে  খরচ হয়েছে মাত্র এক হাজার ২শ টাকা। ২টি ভিপ  বোর্ড বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে ২হাজার টাকা ।  অথচ কোনো ভিপ বোর্ড তৈরি করা হয়নি। ডিজিটাল  বোর্ড বাবদ হাজার ৫শ টাকা খরচ দেখানো
  হয়েছে। কিন্তু কোনো বোর্ড তৈরি করা হয়নি।   আলমারী মেরামত, বেঞ্চ মেরামত, উপকরণ ক্রয় ও বিষয় ভিত্তিক শিক্ষক ম্যানুয়াল বাবদ খরচ দেখানো  হয়েছে ১২ হাজার ১শ টাকা। এগুলো কিছুই করা হয়নি।   এছাড়াও অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ে খরচ দেখানো   হলেও তার নামমাত্র খরচ করা হয়েছে বলে সহকারী শিক্ষকরা জানিয়েছেন।   বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও দারিয়াপুর ইউপির ৭  নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শাজাহান আলী জানান, গত ১১   জানুয়ারি ম্যানেজিং কমিটির সভায় ২০১৫-১৬ অর্থবছরের   হিসাব হিসাব দেখতে চাইলে প্রধান শিক্ষিকা দেখাতে   পারেননি। তখন সভাপতি তড়িঘড়ি করে সমাপনী   বক্তব্য দিয়ে সভা শেষ করে দেন। তবে   গ্রামবাসী জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ  করেছি শুনেছি। গ্রামবাসী চাইলে পরবর্তি সভায়  পুনরায় হিসাব চাওয়া হবে। তিনি বলেন, যে সকল খাতে  খরচ করা হয়েছে তার অনেক কাজ করা হয়নি এটা ঠিক।  তবে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রাইহান
  উদ্দিনের মোবাইলে ফোন করলে তিনি ফোন  রিসিভ না করে কেটে দেন।   এ ব্যাপারে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক শিরিনা খাতুনের মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করার পর   সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে থেমে যান এবং ফোন   কেটে দেন। তারপর ঠিক ৫মিনিট পর ফোন দিয়ে   তিনি জানান, এ ধরণের অভিযোগ আপনার কাছে   থেকে প্রথম শুনলাম। স্কুলের কাজ সব ঠিকঠাক   হয়েছে। এখন রাত। কথা যা হবে আমার কতৃপক্ষের  সাথে হবে ।  যোগাযোগ করা হলে মেহেরপুরের জেলা  প্রশাসক পরিমল সিংহ বলেন, প্রধান শিক্ষক শিরিনা   খাতুনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পত্র পেয়েছি।   তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা   হবে।