রবিবার, ২৬ মার্চ, ২০১৭

আজ ২৬ মার্চ।মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস।


আজ ২৬ মার্চ। বাঙালির শৃঙ্খল মুক্তির দিন। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। বিশ্বের বুকে লাল-সবুজের পতাকা ওড়ানোর দিন। রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের সূচনার সেই গৌরব ও অহঙ্কারের দৃপ্ত শপথের দিন আজ। ভয়াল ‘কালরাত্রি’র পোড়া কাঠ, লাশ আর জননীর কান্না নিয়ে রক্তে রাঙা নতুন সূর্য উঠেছিল ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ। দীর্ঘ ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন তার চূড়ান্ত পরিণতি।আজ থেকে ৪৬ বছর আগের ঠিক এমনি এক ভোররাতে পাক বাহিনীর গণহত্যার বিরুদ্ধে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। শত্রুসেনাদের বিতাড়িত করতে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়াই করার বঙ্গবন্ধুর ডাকে জীবনপণ সশস্ত্র লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে বীর বাঙালি। ঘোরতর ওই অমানিশা ভেদ করেই দেশের আকাশে উদিত হয় স্বাধীনতার চিরভাস্বর সূর্য। বাঙালির অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই শুরু হয়েছিল একাত্তরের আজকের এই দিনে। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত মহার্ঘ স্বাধীনতার ৪৬তম বার্ষিকী। ১৯৭০-এর নির্বাচনে জয়ী আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে অস্বীকৃতি জানায় পাকিস্তানি সামরিক জান্তা। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতের আঁধারে পাকিস্তানি হানাদাররা শুরু করে ইতিহাসের সবচেয়ে বর্বরতম গণহত্যা। জাতির এ ক্রান্তিলগ্নে ২৬ মার্চের শুরুতেই বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেন দেশের স্বাধীনতা। ডাক দেন সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের। একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে অর্জিত হয় মুক্তিযুদ্ধের মহিমান্বিত বিজয়। মহান স্বাধীনতার এদিনে আমরা স্মরণ করছি জাতির জনক সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। স্মরণ করছি মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ এবং পাকিস্তানি হানাদারদের দ্বারা নিগৃহীত দুই থেকে তিন লাখ মা-বোনকে।
রাষ্ট্রপতির বাণী
বাণীতে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ দেশবাসী ও প্রবাসে বসবাসরত বাংলাদেশের সকল নাগরিককে স্বাধীনতা দিবসের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, মহান স্বাধীনতা দিবস আমাদের জাতীয় জীবনে এক গৌরবময় দিন। বহু ত্যাগ-তিতিক্ষা এবং দীর্ঘ ন’মাস সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয় আমাদের মহান স্বাধীনতা। তিনি বলেন, স্বাধীনতার মূল লক্ষ্যে পৌঁছতে দলমত নির্বিশেষে সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস প্রয়োজন। রাষ্ট্রপতি স্বাধীনতার এ মহান দিনে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করতে দেশ-বিদেশে বসবাসরত সকল নাগরিককে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রীর বাণী
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন। এই অর্জনকে অর্থপূর্ণ করতে সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে হবে, স্বাধীনতার চেতনাকে ধারণ করতে হবে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে পৌঁছে দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংবিধান, গণতন্ত্র ও সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে বানচাল করতে স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এবং গণতন্ত্রবিরোধী শক্তির ষড়যন্ত্র এখনও চলছে। দেশবাসীকে স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও দেশবিরোধী যে কোনো অপতত্পরতা ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করার আহ্বান জানান তিনি।
স্বাধীনতা দিবসে ঐক্য কামনা করেছেন এইচএম এরশাদ
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে এক বিবৃতিতে জাতীয় পার্টির (এ) চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ দেশবাসীকে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি সবার ঐক্য কামনা করেছেন।
স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় পার্টির (জেপি) শুভেচ্ছা
জাতীয় পার্টির-জেপি চেয়ারম্যান এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এবং মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম ৪৪তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে এক বিবৃতিতে বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং দখলদার পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক সংগ্রামের আহ্বান জানান। পরবর্তীতে নয় মাসের গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ হানাদার মুক্ত হয়।
বিবৃতেতে তারা বলেন, আজকের এই দিনে আমরা তাই গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি সেইসব অকুতোভয় বীর সন্তানদের; যাদের সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করতে সমর্থ হয়েছিল। কিন্তু
স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরও আমরা ক্ষুধা, দারিদ্র্যতা, নিরক্ষরতা, বুদ্ধিহীনতার গ্লানি থেকে মুক্তি পাইনি। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সেই চেতনাকে আবারও ধারণ করে ঐক্যবদ্ধভাবে এই গ্লানি হতে মুক্ত হওয়ার সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়ার জন্য নেতৃদ্বয় দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
বিরোধী দলীয় নেতার বাণী
বাণীতে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ সুশাসন ও ন্যায়ভিত্তিক দেশ গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে তিনি দেশবাসী ও প্রবাসে বসবাসরত বাংলাদেশের সব নাগরিককে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। তিনি জাতীয় জীবনে এ শুভ মুহূর্তে পারস্পরিক হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে সবার সম্মিলিত ও সর্বাত্মক প্রচেষ্টায় দুর্নীতি ও দারিদ্র্যমুক্ত অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ দেশ গড়ার কাজে এগিয়ে আসারও আহ্বান জানান।
বিএনপি নেত্রীর বিবৃতি
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এক বিবৃতিতে বলেন, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস আমাদের জাতীয় জীবনে এক গৌরবোজ্জ্বল সোনালী দিন। এদিনে বিশ্ব মানচিত্রে দেশমাতৃকার স্বাধীন সত্তা ফুটে উঠেছিল। আজকের এইদিনে দেশবাসী ও প্রবাসী বাংলাদেশিসহ সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন